
জেলা প্রতিনিধি পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ রেঞ্জ অফিসের টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ আড়াল করতে তথ্য গোপনের প্রবণতা দেখা গেছে। পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কর্মকর্তাদের বদলির অজুহাতে অনেক তথ্য গোপন রাখা হয়েছে।
গত ৮ জুলাই তথ্য অধিকার আইনে দেবীগঞ্জ রেঞ্জ কর্মকর্তা কার্যালয়ে আবেদন করেন প্রতিবেদক। এতে ২০২২ সালে দেবীগঞ্জ রেঞ্জ এলাকায় শুরু হওয়া সুফল প্রকল্পে স্টেশনারি, বৃক্ষরোপণ, অফিস ভাড়া, ঋণ কর্মসূচিসহ বিভিন্ন খাতভিত্তিক বরাদ্দ ও ব্যয়ের হিসাব চাওয়া হয়।
এর পর ৩০ জুলাই দেবীগঞ্জ রেঞ্জ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল করিম দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষকের কাছে একটি চিঠি পাঠান। সেখানে তিনি জানান, চাহিত তথ্য তার যোগদানের আগের এবং অফিসে সংরক্ষিত নেই। এগুলো সংগ্রহ করতে ১২-১৫ দিন সময় প্রয়োজন হবে।
পরে ৬ আগস্ট সহকারী বন সংরক্ষক ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা নূরুন্নাহার ডাকযোগে প্রেরিত এক চিঠিতে প্রতিবেদককে জানান, প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বর্তমানে দপ্তরে কর্মরত না থাকায় এবং তথ্য সংগ্রহে একাধিক ইউনিট জড়িত থাকায় ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য সরবরাহ করা হবে।
অবশেষে ২৮ আগস্ট ডাকযোগে উত্তর পাঠানো হয়। তবে তাতে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে। আবেদনে বৃক্ষরোপণ, ঋণ কার্যক্রম ও প্রকল্প চলমান অবস্থায় গঠিত সব ক্রয় কমিটির তথ্য চাওয়া হলেও সেগুলো সরবরাহ করা হয়নি।
একদিকে তথ্য না দেওয়া এবং অন্যদিকে রেঞ্জ কার্যালয়ে তথ্য সংরক্ষিত না থাকার অজুহাত প্রকল্পের অনিয়মকে আবারও সামনে এনেছে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী এসব তথ্য রেঞ্জ কার্যালয় ও দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগে সংরক্ষিত থাকার কথা। কিন্তু কর্মকর্তাদের বদলি ও পুরনো নথির অজুহাত দিয়ে দায় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। অফিস থেকে তথ্য গায়েব হওয়ার বিষয়টি অনিয়মকে ঢাকতে ঘটানো হয়েছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সেই সাথে প্রকল্প চলাকালীন নজরদারির অভাবের বিষয়টিও সামনে এনেছে।
সহকারী বন সংরক্ষক ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা নূরুন্নাহার বলেন, আমি আইন কানুন বিধি বিধান মেনে আপনাকে তথ্য দিয়েছি। আপনার পছন্দ না হলে পুনরায় আবেদন বা আপীল করতে পারেন।
এই বিষয়ে জানতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ফাহিম মাসউদ এর অফিসিয়াল মোবাইল নাম্বারে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, বন অধিদফতরের দেড় হাজার কোটি টাকার ‘সুফল’ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।