ইরানের সামরিক বাহিনীর সর্বশেষ ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’-এর ১৪তম দফার ভয়ঙ্কর হামলায় তেলআবিবে নেমেছে মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের ছায়া। একাধিক প্রজন্মের কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র ও আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে চালানো হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল ইরানের একের পর এক ভয়ঙ্কর হামলায়। যুদ্ধবাজ ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ নামক সামরিক অভিযানের আওতায় ইরান ১৪তম দফায় ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরাইলের রাজধানী তেলআবিবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। বৃহস্পতিবার রাতের এই বিপুল আক্রমণে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে বলে গোপন ইসরাইলি সূত্র নিশ্চিত করেছে, যদিও অফিসিয়ালভাবে হতাহতের সংখ্যা গোপন রাখা হয়েছে।
ইরানি গণমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, এবার ইসরাইলে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র ছিল নতুন প্রজন্মের উন্নত প্রযুক্তির, যেগুলো ইসরাইলের বহুস্তরবিশিষ্ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে সরাসরি লক্ষ্যে আঘাত হানে। আত্মঘাতী ড্রোনগুলোর সঙ্গে কৌশলগতভাবে ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বয় করায় হামলার ব্যাপকতা এবং সফলতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতের হামলায় তেলআবিবের একটি হাসপাতালের কাছেই অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা দপ্তরে নিখুঁতভাবে আঘাত হানা হয়েছে। ইরানের এই অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল ইসরাইলি সামরিক ও গোয়েন্দা কেন্দ্রগুলো, যা বাস্তবায়ন করতেই তারা একাধিক নিশানায় টার্গেট করে হামলা চালায়।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী হামলার ভিডিও প্রকাশে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও, তা ঠেকানো যায়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে, আতঙ্কিত ইসরাইলিরা প্রাণ বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছুটছে। কেউ ছুটছে ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে, আবার কেউ দিশেহারা হয়ে উল্টোপথে পালাচ্ছে। সেই সঙ্গে বিপদের সাইরেনের বিকট শব্দ আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে তোলে।
ইসরাইলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ এতদিন ছিল এক গর্বের বিষয়। কিন্তু ইরানের এ আক্রমণে আয়রন ডোমের কার্যকারিতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানায়, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নানা ঘাটতি প্রকাশ্যে এসেছে।
হামলার ধরন: কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র ও আত্মঘাতী ড্রোন
আক্রমণের স্থান: তেলআবিব, সামরিক সদর, গোয়েন্দা কেন্দ্র, হাসপাতালের আশেপাশে
নিহত: গোপন সূত্রে জানা গেছে ৫০ জনের বেশি
ক্ষয়ক্ষতি: সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় ব্যাপক ধ্বংস
এই হামলার পর আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ভয়াবহতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্লেষকরা। ইরান-ইসরাইলের এই যুদ্ধ পরিস্থিতি নতুন করে বড় ধরনের সামরিক সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে, যা গোটা অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে চরম হুমকির মুখে ফেলবে।
ইরানের এই সাম্প্রতিক হামলা শুধু ইসরাইলের সামরিক সক্ষমতার ওপর নয়, বরং আঞ্চলিক নিরাপত্তা, কূটনৈতিক ভারসাম্য এবং ভবিষ্যতের যুদ্ধনীতির ওপরও বড় প্রভাব ফেলবে। ইসরাইল আপাতত চুপ থাকলেও পাল্টা প্রতিশোধ যে সময়ের অপেক্ষা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।