পুরান ঢাকার আরমানিটোলার নূর বক্স লেনের একটি বাসার সিঁড়ি থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই বাড়িতে উচ্চমাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে টিউশনি করাতেন তিনি। আজ রবিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে পুলিশ জুবায়েদ হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে।
জানা যায়, ঘটনার পর আরমানিটোলার নূর বক্স লেনের ওই ভবনটি ঘিরে রেখেছে জবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, জুবায়েদ হোসেন ওই বাসার ৫ম তলায় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতেন। পড়াতে যাওয়ার সময় তিনি ফোনে ওই ছাত্রীকে জানান যে, তিনি ইতিমধ্যে নূর বক্স লেনে প্রবেশ করেছেন। কিছুক্ষণ পরই বাসার সিঁড়ি থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিচতলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল, যা দেখে ধারণা করা হচ্ছে— প্রাণ বাঁচাতে তিনি নিচতলা থেকে ৩য় তলা পর্যন্ত ছুটে গিয়েছিলেন।
জবি শিক্ষার্থীরা জানান, এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটলেও ভবনের কেউ কিছু বুঝতে পারেনি বলে দাবি করছে। তিনতলায় থাকা এক বাসিন্দা জানান, ‘হঠাৎ কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনে আমরা উপরে ফোন করি। পরে এসে দেখি, লাশটি তিন তলায় পড়ে আছে।’ অন্য একজন জানান, ওই ছাত্রের গায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগোসংবলিত জার্সি ছিল।
সেখানে তাঁর নামও লেখা ছিল। এটি দেখে লোকজন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোন দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনাস্থল ভবনে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তবে পাশের ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, পেছন দিক থেকে দুজন যুবক দ্রুত দৌড়ে আসছেন। একজনের গায়ে কালো টি-শার্ট, আরেকজনের গায়ে গোলাপী রঙের টি-শার্ট ছিল।
তবে ফুটেজটি অস্পষ্ট হওয়ায় তাদের মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। এদিকে, সিসিটিভি ফুটেজের পাশাপাশি এক ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ। যেহেতু সিসিটিভি ফুটেজটি এখনও অস্পষ্ট, তাই আশেপাশের ফুটেজগুলোও চেকিং চলছে।
ওই সূত্র আরো জানায়, খুনের ঘটনায় আপাতত কাউকেই সন্দেহের বাইরে রাখছে না পুলিশ। এক্ষেত্রে টিউশনি করানো ওই ছাত্রী ও তার পরিবার এবং তৃতীয় এক যুবককেও সন্দেহের তালিকায় রেখেছে পুলিশ।
বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ছুরিকাঘাতে জবি শিক্ষার্থী মারা গেছেন। এটি তার টিউশনির বাসা ছিল। ঘটনাটি তদন্তাধীন। হত্যার কারণ এখনও পরিষ্কার নয়, তবে আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি।’
সূত্র : কালের কন্ঠ