স্বপ্নভঙ্গের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ দল। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছাড়লেও ফিরতে হতে পারে খালি হাতে, গ্রুপপর্ব থেকেই। হংকংয়ের বিপক্ষে নড়বড়ে জয়ের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো প্রথম দুটি ওভারই গিয়েছিল উইকেট মেইডেন হয়ে। লিটন দাস আর তাওহীদ হৃদয় চেষ্টা করেও টেনে তুলতে পারেননি দলকে। শেষ ভরসা হয়ে নামতে হয় জাকের আলী আর শামীম হোসেনকে। যদিও দুজন মিলে ৮৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন, তবে তাদের অপরাজিত ৪১ আর ৪২ রান দলকে জয়ের কাছে নিতে পারেনি। ব্যাটিং ব্যর্থতার সঙ্গে যোগ হয়েছিল ক্যাচ মিস আর বোলারদের অধারাবাহিকতা। শ্রীলঙ্কার আক্রমণাত্মক আর বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ।
সেই ম্যাচের পর আলোচনায় এসেছে তাসকিন আহমেদকে একাদশে না রাখার সিদ্ধান্তও। তার জায়গায় শরিফুল ইসলামকে খেলানো হয়েছে, যা দলের ভেতরে খানিকটা ভারসাম্য নষ্ট করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ তাসকিনের উপস্থিতি শুধু বোলিং নয়, দলের মনোবলও বাড়িয়ে দেয়।
এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে বাংলাদেশকে। প্রতিপক্ষ যখন উল্টো স্রোতে ছুটছে, বাংলাদেশ তখন পিছিয়ে যাচ্ছে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে। ফলে এই ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। না জিততে পারলে এশিয়া কাপে তাদের যাত্রা থেমে যেতে পারে শুরু হওয়ার আগেই।
অন্যদিকে হংকংয়ের বিপক্ষে নেট রানরেট বাড়ানো জয়ের পর আজ আফগানিস্তানের সামনে সুযোগ গ্রুপ-বি-এর শীর্ষস্থানে উঠে যাওয়ার। প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ যেখানে শ্রীলঙ্কার কাছে বড় ব্যবধানে হেরে এসেছে। ফলে ম্যাচ শুরুর আগেই মানসিকভাবে এগিয়ে আফগানিস্তান।
হংকংয়ের বিপক্ষে আফগানিস্তানের জয়ের নায়ক আজমাতউল্লাহ ওমরজাই ছয় নম্বরে নেমে খেলেছেন রেকর্ড গড়া অর্ধশতকের ইনিংস, করেছিলেন মাত্র ২১ বলে ৫৩ রান, ইনিংসে ছিল পাঁচটি ছক্কা আর দুটি চার। তার ব্যাটে ভর করেই আফগানিস্তান পায় ৯৪ রানের বিশাল জয়। সেদিকুল্লাহ আতালের সঙ্গে ওমরজাই যোগ করেন ৮২ রানের জুটি। আতাল অপরাজিত থাকেন ৭৩ রানে। আফগানিস্তানের বোলিং ইউনিটও ছিল নিজেদের সেরা রূপে হংকং ব্যাটারদের সুযোগ দেয়নি বিন্দুমাত্র। রশিদ খানের দলের জন্য দারুণ ব্যাপার হলো তরুণ স্পিনার এএম গজনফর ও নূর আহমদ দায়িত্ব নিচ্ছেন নিয়মিতভাবে। হংকংয়ের বিপক্ষে না খেললেও অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী বাংলাদেশের বিপক্ষে বল হাতে নামবেন বলেই প্রত্যাশা।
এ ম্যাচে স্পটলাইটে থাকবেন দুজন আজমাতউল্লাহ ওমরজাই আর শামীম হোসেন। একদিকে ওমরজাই ব্যাট-বল হাতে নতুন নির্ভরতার নাম হয়ে উঠছেন আফগানিস্তানের জন্য। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লড়াকু ইনিংস খেলে আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন শামীম। এই আত্মবিশ্বাসই তাকে সামনে ঠেলে দেবে আফগানিস্তানের ভয়ংকর স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে।
আবুধাবির উইকেটে এর আগে দেখা গেছে ব্যাটারদের জন্য সুবিধা থাকলেও বোলারদেরও মিলছে পর্যাপ্ত সহায়তা। তবে গরম আবহাওয়া খেলোয়াড়দের জন্য বাড়তি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য বার্তা একটাই- দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে হবে। নয়তো এশিয়া কাপে টাইগারদের অভিযানের ইতি ঘটবে গ্রুপপর্বেই।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ অন্তর হোসেন রকি, বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: +৮৮ ০১৬০৬৬১৮১৪৭
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত