
জাহিদ হাসান, জেলা প্রতিনিধি বরিশাল : বরিশালের মুলাদী উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্র শিবির ও ছাত্রদলের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ছাত্র শিবিরের ২০ জন এবং ছাত্রদলের ৫ জন রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুলাদী সরকারি কলেজে এই ঘটনা ঘটে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলাকালীন ছাত্রদলের হামলায় অন্তত ১২ থেকে ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে ৫-৬ জনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন মান্না (২), হামিম (২০), বায়েজিদ (২৩), আবদুল্লাহ (২৪) এবং রাকিব (২৪)। প্রত্যেকেই মুলাদী উপজেলার বাসিন্দা।
শিবির নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে মুলাদীর কলেজে শিবিরের নবীনবরণ অনুষ্ঠান প্রস্তুতি চলাকালীন সময় ছাত্রদলের একটি গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে ভাঙচুর ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের বরিশাল জেলা সভাপতি মো. আকবর হোসেন ও জেলা সেক্রেটারি সাইদ আহম্মেদ জানিয়েছেন, নবীনবরণ অনুষ্ঠানের দাওয়াতি কাজ চলাকালীন হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ১২ থেকে ১৫ জন সদস্য আহত হন, যাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর।
মুলাদী কলেজ শিবির সভাপতি সৌরভ বলেন, বুধবার গভীর রাতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শিবির অফিস এবং অর্থ সম্পাদকের বাসায় হামলা চালায়। বৃহস্পতিবার সকালে নবীনবরণ অনুষ্ঠান প্রস্তুতি সভা চলাকালীন অতর্কিত হামলা চালানো হয়।
তিনি জানান, আহতদের মধ্যে ৬ জনকে মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মুলাদী উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মহিউদ্দিন ঢালী দাবি করেছেন, ছাত্রদল নেতাদের কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দিয়ে ছাত্রদলের স্থানীয় ৫ জন নেতাকর্মীকে মারধর করেছে শিবিরের নেতারা। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মুলাদী থেকে ৬ জন আহত রোগী ভর্তি হয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে এবং চিকিৎসা চলছে।
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল কলেজে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের কয়েক নেতা মঞ্চে থাকায় ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে। এ ঘটনার জের ধরে আজ সংঘর্ষ বাধে। তবে খবর পেয়ে পুলিশ উপস্থিত হলে উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রেহাই মেলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আহত হওয়ার ঘটনা পুলিশ পৌঁছানোর আগে ঘটেছে। ঘটনার পর থেকেই মুলাদী এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।’